বয়কট করলে তাদের সকল প্রোডাক্ট বয়কট করেন, একটা দুইটা কেন? |ফাহাদ ইবনে ইলিয়াস|

2 min read

Yahooদিদের (Zio-নিস্ট) প্রোডাক্ট বর্জন করার সময় সবচাইতে কমন কাউন্টার আর্গুমেন্ট দাঁড় করানো হয়, "তাহলে ফেইসবুক, গুগল ব্যবহার করেন কেন?"

©কলা বিজ্ঞানী


দেখুন, যেই পার্স্পেক্টিভে এই প্রশ্ন উত্থাপন করা হচ্ছে, তার মূল লজিক এমন যে, বর্জন করলে সকল প্রোডাক্ট বর্জন করতে হবে, নয়ত কোনটাই করা উচিৎ নয়। বর্জনের এই নীতি কোন স্ট্যান্ডার্ড ফলো করে বানানো, আমার জানা নেই। হ্যাঁ, কেউ যদি সবকিছু বর্জন করতে পারে সেটা তো সবচেয়ে ভালো। কিন্তু না পারলে, বা না করলে, কোন কিছুই করা উচিৎ না- এটা তো কোন র‍্যাশনাল আর্গুমেন্ট হতে পারে না। 


মনে করুন, একজন অনেকগুলো খারাপ কাজ করে। একসময় ঠিক করলো, আজ থেকে সে খারাপ কাজগুলো আস্তে আস্তে কমিয়ে দিবে। এবং এই প্রতিজ্ঞা পূরণের শুরুতে সে ঠিক করলো, আজ থেকে সে আর মদ খাবে না। এখন এই মদ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে বলে তাকে কি বলা যাবে যে, "আপনি মদ খাওয়া ছাড়লেন কেন? আপনি তো ঠিকমতো নামাজ পড়েন না। যখন সব খারাপ কাজ ছাড়তে পারবেন, তখন গিয়ে মদ খাওয়া ছাড়বেন।" এটা কি কোন র‍্যাশনাল রেস্পন্স হলো? নাকি এর জন্য সে এপ্রিসিয়েশন ডিজার্ভ করে। বরং আপনি তাকে বলতে পারেন, "মাশাআল্লাহ, আপনি মদ খাওয়া ছেড়েছেন, আল্লাহ আপনাকে আস্তে আস্তে বাকি খারাপ কাজগুলোও ছেড়ে দেয়ার তৌফিক দান করুন।"


এখন আসি ফেইসবুক বা সোশাল মিডিয়া না ছাড়ার পিছনে কারণ। দেখুন, ফেইসবুককে শুধুমাত্র প্রোডাক্ট হিসেবে চিন্তা করলে হবে না। এটা একটা জনমত তৈরি করার প্ল্যাটফর্ম। আর এখন বুদ্ধিবৃত্তিক আধিপত্য দিয়ে অ স্ত্রে র যু দ্ধের ভিত্তি তৈরি করা হয়। একারণেই সোশাল মিডিয়াতে এত প্রোপাগাণ্ডার ছড়াছড়ি, কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের বাড়াবাড়ি। সাম্প্রতিককালে, Yahooদিদের সবচেয়ে বড় অ স্ত্র হচ্ছে এই প্রোপাগাণ্ডা। ৭ অক্টোবরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহু প্রোপাগান্ডা আর ফেইক নিউজ তৈরি করে গাযযায় গণ হ ত্যা চালানোর প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়েছিলো। ফলে প্রাথমিকভাবে ওয়েস্টের জনমত তাদের পক্ষে ছিলো। কিন্তু টুইটার এসে ফ্যাক্টচেক করে বাগড়া বাঁধালো। প্রোপাগাণ্ডাগুলো এক্সপোজড হতে লাগলো। ওয়েস্টের বেশিরভাগ মানুষ নতুন করে ইতিহাস ও বাস্তবতা জানতে পারলো। প্রতিবাদ বয়কটে শামিল হলো। অনেকে মুসলিম পর্যন্ত হয়ে গেলো এবং এখনো হচ্ছে। ভার্সিটিগুলোতে কঠোর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। অর্থাৎ যেটা বোঝাতে চাচ্ছি, বয়কটের নামে মাস মিডিয়া বর্জন করা মানে উলটো তাদেরকে ফাঁকা মাঠে খেলার সুযোগ করে দেয়া। বরং এই তথ্য স ন্ত্রা সের যুগে আমাদের সোশাল মিডিয়াতে আরো প্রো-এক্টিভ হওয়া প্রয়োজন। তাদের এই পণ্য ব্যবহারের কাফফারা হিসেবে সবসময় হক্ব কথার প্রচার-প্রচারণার সাথে নিয়োজিত থাকা উচিৎ। 


এছাড়া বয়কট একটা স্ট্র‍্যাটিজি নির্ভর এক্টিভিজম। এমন কোন স্ট্র‍্যাটিজি তৈরি করা ঠিক নয় যা পালন করা সম্ভব নয়। তাই বয়কটের স্পেসিফিক টার্গেট রয়েছে যাতে তা বাস্তবসম্মত হয়। গুগুল বা এমন কোন প্রোডাক্ট বয়কটের মধ্যে আনা হয় না যা বাস্তবতা পরিপন্থী। তাই বিডিএসের মত বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে যারা বয়কটের জন্য কার্যকরী পণ্যের তালিকা তৈরি করে দেয় যাতে তা এফেক্টিভ হয়। 


ইতোমধ্যে বয়কটের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে Yahooদিদের বহু কোম্পানি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লসের সম্মুখীন হয়েছে। ফলে জালিমের নগ্ন সমর্থন থেকে বহু কম্পানিগুলো বিরত হয়েছে। আগেই বললাম, এইটা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বা অ স্ত্রের যু দ্ধ নয়, তথ্য প্রচারের যু দ্ধ- যা বয় কট কিছুটা হলেও নিবৃত করতে বাধ্য করে। তাছাড়া এটা একটা চেতনাগত অবস্থান। আপনার একনিষ্ঠ ক্ষুদ্র চেষ্টাও কবুলিয়াতের জন্য যথেষ্ট হয়ে যেতে পারে ইনশা আল্লাহ।


লেখকঃ ফাহাদ ইবনে ইলিয়াস 

You may like these posts

2 comments

  1. second ago
    সবগুলো প্রোডাক্ট বয়কট না করে ২/১ টা করি কারণ আমরা বাঙালি হচ্ছি বড়ো উজবুক। নিজের স্বার্থের জন্য সব করতে পারি। পাশের মানুষ না খেয়ে মরে গেলেও আমদের কিছু হবে না। আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করি না কিন্তু কেউ করলে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করি।
  2. second ago
    কত দেয় কমেন্টপ্রতি? জায়ো&স্টদের পা না টেচে গু খাইতে পারস না? আর বয়কট মুভমেন্ট সম্পর্কে আদৌও কোন ধারণা আছে তোর? শুধু বাঙালিকে গালি দিয়েই পার পাবি?
    পড়াশোনা জানলে পড় তাও এমন ভক্সোদামি করিস না:
    1. https://www.foa.org.uk/campaign/boycottcocacola
    2. https://bdsmovement.net/